1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি

  • Update Time : সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০২০
  • ২১১ Time View

কক্সবাজার সংবাদদাতাঃ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতটি পৃথিবীর দীর্ঘতম অখন্ডিত সমুদ্র সৈকত। ১২০ কিঃমিঃ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট এ সমুদ্র সৈকতের বৈশিষ্ট হলো পুরো সমুদ্র সৈকতটি বালুকাময়, কাদা অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। বালিয়াড়ি সৈকত সংলগ্ন শামুক-ঝিনুক নানা প্রজাতির প্রবাল সমৃদ্ধ বিপণি বিতান, অত্যাধুনিক হোটেল মোটেল কটেজ, নিত্য নব সাজে সজ্জিত বার্মিজ মার্কেট সমূহে পর্যটকদের বিচরণে কক্সবাজার শহর পর্যটন মৌসুমে প্রাণচাঞ্চল্য থাকে। সুইজারল্যান্ডের “New Seven Wonderers Foundation” নামীয় বার্নাড ওয়েবার এর ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ২০০০ সালে ২য় বারের মত বিশ্বের প্রাকৃতিক নতুন সপ্তাশ্চার্য নির্বাচন প্রতিযোগিতায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতটি কয়েকবার শীর্ষ স্থানে ছিল।

কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যে বর্তমানে এই বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের গৌরবময় এই স্বাস্থ্যকর পর্যটন স্পট কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত আজ বিপর্যস্ত দিনদিন ছোট হয়ে যাচ্ছে চোখের নিমিষেই। ১৯৯১সালের প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের এর পর থেকে একের পর এক সিডর, বিজলি, আইলা, রোয়ানু এবং আমফান এর মত প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় গুলো আঘাত করে যাচ্ছে একের পর এক ঝাঁও বন তার সঙ্গে ভেঙে যাচ্ছে। ১২০কিলোমিটিরের বেশি সাগরের কুল ঘেঁষে গড়ে উঠাপর্যটন স্পট আজ অরক্ষনের অভাবে বিলিয়ন হয়ে যাচ্ছে সমুদ্র গহ্বরে তাছাড়াও চরা ভূমি দখল করে নির্মাণ করছে হোটেল মোটেলসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

যা দিন দিন আয়তনের দিক দিয়ে কমে গিয়ে সমুদ্রের জোয়ারের প্রবল স্রোতে ভেঙে যাচ্ছে আমাদের প্রিয় সমুদ্র সৈকত। তাছাড়াও এর দ্বিতীয় কারণ জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ু পরিবর্তন বিযয়ক জাতিসংঘের আন্তঃ সরকার প্যানেল(IPCC) এর মূল্যায়নে জানিয়েছেন যে, এই শতাব্দীর মধ্যে বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ এলাকা ডুবে যেতে পারে। বিশ্বব্যাপী শিল্পায়ন, anthropogenic problem (মানব সৃষ্ট সমস্যা ) এর কারণে সমস্যা আরও প্রকট হতে পারে। উল্লেখ্য যে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জার্মান ওয়াচ প্রকাশিত Global climate risk index (CRI) অনুযায়ী জলবায়ু জনিত ক্ষতির বিচারে শীর্ষ দশটি ক্ষতিগ্রস্থ দেশের মধ্যে প্রথমেই অবস্থান করবে বাংলাদেশ।

বিশাল এলাকার সমুদ্র উপকূল মেরিনড্রাইভ সংলগ্ন ২ কিলোমিটার ঝাউ বাগান সমুদ্রে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বর্ষার মৌসুমে সাগরের জোয়ারের তীব্র আঘাতে সারি সারি ঝাউবীথি হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে সৌন্দর্য বর্ধন বিনষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বসবাসরত ভূমিহীন শত শত পরিবার হুমকির মুখে পড়েছে। অন্য দিকে সৈকতের দক্ষিণে অবহিত উখিয়া উপজেলার জালিয়া পালং ইউনিয়নে পশ্চিম সোনার পাড়া, চর পাড়া, গুচ্ছ গ্রাম, সমিতি পাড়া ও টিন পাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের শতশত পরিবার বসবাস করে আসছে।

বঙ্গোপসাগরের তীরে এসব গ্রামের বাসিন্দারা এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ বঙ্গোপসাগরের তীর ভাঙনের ফলে তলিয়ে যাচ্ছে বিস্তৃত সমুদ্র চর। সরজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, সাগরের জোয়ারের তীব্র আঘাতে সমুদ্রচর পার হয়ে এবার ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে মেরিনড্রাইভ সংলগ্ন ঝাউ বাগানে।

সোনার পাড়া পুলিশ চেকপোস্ট সংলগ্ন সমুদ্র পাড় থেকে শুরু করে রেজু’র মোহনা পর্যন্ত দীর্ঘ ২ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত ঝাউ বাগান প্রায় সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানি এই বাগানে প্রবেশ করে। এ ভাবে ভাঙ্গন চলতে থাকলে ঝাউ বাগান বিলীন হয়ে আঘাত আনবে সরাসরি মেরিনড্রাইভ সড়কে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে মেরিনড্রাইভ এর সৌন্দর্য বর্ধন করা হলেও মেরিনড্রাইভ রক্ষায় দেখা যাচ্ছে না তেমন কোনো উপযোগী উদ্যোগ।

সচেতন নাগরিক সমাজের অভিমত স্বপ্নের মেরিনড্রাইভ সড়ক লক্ষ মানুষের বিনোদন ও পর্যটন শিল্পের মধ্যমনি হলেও আজ দিন দিন হুমকির মুখে পতিত হচ্ছে। তা সরাসরি প্রভাব ফেলবে জাতীয় অর্থনীতিতে। তাছাড়া সমুদ্র উপকূলীয় ঝাউ বাগানে প্রায় ভূমিহীন পরিবার গুলো দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত বাড়ি-ঘর ও জীবনযাপন হুমকির মুখে পড়েছে। পশ্চিম চর পাড়া ঝাউ বাগানে বসবাসকারী মোহাম্মদ আলী বলেন, “প্রতিদিন জোয়ারের পানিতে ১০-১২ টি করে ঝাউগাছ ভেঙে যাচ্ছে। বেশ কিছুদির যাবৎ আমরা খুবই আতঙ্কে বসবাস করছি।

স্থানীয় লোকজন বলেন, “আমরা ভূমিহারা হয়ে এখানে বসবাস করতাম কিন্তু এভাবে ঝাউগাছ ও সমুদ্র পাড়ের ভাঙনের কারণে আমরা এখানে বসবাস করার মতো সাহস পাচ্ছি না।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানান, “ইতোমধ্যে জোয়ারের পানি মেরিনড্রাইভ ছুঁই ছুঁই অবস্থা দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া এই প্রাকৃতিক সম্পদ গুলো এভাবে ধ্বংস হয়ে গেলে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ইতোমধ্যে ঝাউ বাগানে বসবাসরত অনেক ভূমিহীন মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে সমুদ্রে তলিয়ে গেছে। উখিয়া জালিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী জানান, সাগরের করাল গ্রাস থেকে ঝাউবীথি রক্ষা করার জন্য সরকারি ভাবে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন সময়ের দাবি।

তিনি আরও বলেন, দ্রুত বিহীত করা হলে রক্ষা পাবে দেশের অন্যতম এই প্রাকৃতিক সম্পদ ও পর্যটন শিল্প।
জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্ট থেকে ডায়াবেটিক পয়েন্ট পর্যন্ত সৈকতের সাড়ে ৪শ’ মিটার এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। উত্তাল ঢেউ তীরে আছড়ে পড়ায় সৈকতের বিশাল বালিয়াড়ি ক্রমাগত সাগরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে সাগরতীরের বাসিন্দারা। পরিবেশ কর্মী ও পর্যটকরা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা, প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করে যত্রতত্র স্থাপনা নির্মাণ, অব্যাহত পাহাড়কাটা ও অপরিকল্পিত পানি-পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণে সাগরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে বিশ্বের দীর্ঘতম আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকত লাবণী পয়েন্ট সাগরে বিলীন হয়ে যাবে।

কক্সবাজার পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করে যত্রতত্র স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রাখার ফলে সাগরের গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। এ কারণে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে।শুক্রবার দুপুরে লাবণী পয়েন্টের ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, পর্যটকরা যেন সৈকতের ভাঙনকবলিত ও ঝুকিপূর্ণ স্থানে না যান সেজন্য বিচ পুলিশ ও লাইফগার্ডদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ভাঙন রোধে সৈকতে জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে।কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ৩-৪ বছর আগে সমুদ্র সৈকতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বেলি হ্যাচারি থেকে কলাতলী মোড় পর্যন্ত ১২শ’ মিটার এলাকায় জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে এ বছর সেই অংশে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

লাবণী পয়েন্ট থেকে ডায়াবেটিক পয়েন্ট পর্যন্ত সাড়ে ৪শ’ মিটার এলাকায় জিওব্যাগ ফেলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সৈকতের বালিয়াড়ি ও তীর রক্ষায় পাউবো ও আইডব্লিওএন যৌথভাবে সমীক্ষা করে বেলি হ্যাচারী থেকে ডায়াবেটিক পয়েন্ট পর্যন্ত স্থায়ী বাঁধ ও ওয়াকওয়ে নির্মাণের জন্য প্রতিবেদন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে এক মাসের মধ্যে কাজ শুরু করা

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..